বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

"অখণ্ড ভারত"- ভারতের অতীত ঐতিহ্যের পরিচায়ক, সার্বভৌমত্ব হরণের প্রতীক নয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৪০ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

"অখণ্ড ভারত" এর অর্থ প্রাচীন অবিভক্ত ভারতীয় সভ্যতা, ভারতের অন্য কোন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের উপর হস্তক্ষেপ নয়।

সম্প্রতি ভারতের নতুন সংসদ ভবনে স্থাপিত অবিভক্ত ভারতবর্ষের এক মানচিত্র নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা। এ মানচিত্রে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কাও স্থান পেয়েছে। এই মানচিত্র নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করলে দেখা যায় যে বর্তমানে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক দিক দিয়েও এক ধাপ এগিয়ে আসবে ভারত। এ সময়ে এমন বিতর্ক ভারতকে কালিমালিপ্ত করার প্রয়াস মাত্র।

অখণ্ড ভারত এর মানচিত্র নিয়ে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। অপরদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এত সমালোচনার ভীড়ে চাপা পড়ে যাচ্ছে মানচিত্রের আসল সত্যটাই। মূলত সম্রাট অশোকের সময়কালীন ভারতবর্ষকেই দেখানো হয়েছে মানচিত্রে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বর্তমান ভারতের দক্ষিণাংশের একটি বিরাট অংশ, যেমন, কেরালা, তামিলনাড়ুর অবস্থান মানচিত্রে নেই। কারণ এ অঞ্চল সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের বাইরে ছিল।

যারা চিন্তা করছেন যে ভারত অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহকে নিজের দখলে নেওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে, তাদের কাছে প্রশ্ন রইলো তাহলে কেন ভারতের নিজের অংশই এই মানচিত্রে স্থান পায় নি?

মূলত ভারতের ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে শংকিত এবং ঈর্ষান্বিত একটি মহলই রীতিমতো ভারতের নামে এসব মিথ্যে তথ্য ছড়ানোর কাজে লিপ্ত।

নেপালের কে পি শর্মা অলি চীনের হয়েই কাজ করছেন। ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখে ঈর্ষান্বিত চীন নেপালকে ব্যবহার করে ভারতকে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং একই সাথে নেপালের সাথে ভারতের সুসম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলারও পরিকল্পনা করছে। 

অপরদিকে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক কেমন এ ব্যাপারে সবাই অবগত আছে। পাকিস্তান সৃষ্টির শুরু থেকেই ভারতকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে বারবার। এর প্রমাণ পাওয়া যায় অহেতুক কাশ্মির দখলের মাধ্যমেই। তাছাড়া বারবার আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে ভারতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।

এমন একটি সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রকে ভারত তার অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে চাইবে এ চিন্তাভাবনা করাটাও হাস্যকর। পাকিস্তানকে নিজের অংশ করতে চাওয়ার অর্থ হলো পাকিস্তানিরা নির্বিঘ্নে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। ভারত সরকার এবং ভারতীয় নাগরিকেরা কখনোই এমন একটি উগ্র সন্ত্রাসবাদী মানুষদের নিজেদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করার অনুমতি প্রদান করবে না।

নেপালের জনগণেরও উচিত চীনের পরিকল্পনাকে সফল না করে নিজেদের বোধবুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের সত্যতা খুঁজে বের করা। বিগত অনেক বছর ধরেই ভারত এবং নেপালের মাঝে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনী এবং নেপালের সেনাবাহিনী একে অপরের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। এমতাবস্থায় যে কেউ ভারত-নেপালের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে চাইলে দুই দেশের জনগণেরই উচিত এ পরিকল্পনা নস্যাৎ করা।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে জি-২০ এর এক বছরের জন্য সভাপতি হয়েছে ভারত। ভারত সরকার এবছর জি-২০ এর লক্ষ্য স্থাপন করেছে "বসুধৈব কুটুম্বকম"। বসুধৈব কুটুম্বকম একটি সংস্কৃত বাগধারা, যার অর্থ সমগ্র পৃথিবীই আমার আত্মীয়। অর্থাৎ এর দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকেই একটি বৃহৎ পরিবার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ থেকেই বুঝা যায় ভারত সর্বদা ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাসী। ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাস রাখা এমন একটি রাষ্ট্র অপর রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে চাইবে এ জিনিস বিশ্বাসযোগ্য নয়।

অখণ্ড ভারত মানচিত্র নিয়ে সমালোচনা না করে এর সত্যতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন সবার। এই মানচিত্র ভারতের অতীত সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পরিচায়ক, কোন সার্বভৌমত্ব হরণের প্রতীক নয়।

আইকেজে /

Important Urgent

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন